ঢাকা, ০৬ মে, ২০১৫। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী কর্তৃক উপহৃত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন-এর CITATION এবং তাঁর ব্যবহৃত স্মারক সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলাদেশ নৌ বাহিনী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
মোহাম্মদ রুহুল আমিন ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বাঘপাঁচড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আজহার পাটোয়ারী এবং মায়ের নাম জোলখা খাতুন। তিনি ছিলেন বাবা মায়ের প্রথম সন্তান। তিনি বাঘচাপড়া প্রাইমারী স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে আমিষাপাড়া হাই স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকে এসএসপি পাশ করে ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পাকিস্তান নৌ-বাহিনীতে যোগদান করেন।পাকিস্তান নেভাল জাহাজ (পি্.এন.এস) বাহাদুরে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর সেখান থেকে পি্.এন.এস কারসাজে যোগদান করেন।
পরবর্তীতে পি.এন.এস বাবার, পি.এন.এস খাইবার, পি.এন.এস তুঘরিলে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পি.এন.এস. কারসাজে কোর্স্ সমাপ্ত করার পর আর্টিফিসার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম পি.এন.এস. বখতিয়ার নৌ-ঘাটিতে বদলি হয়ে যান। ১৯৭১ সালে মার্চে রুহুল আমিন চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে সীমান্ত পার হয়ে চলে যান ত্রীপুরা। যোগ দেন ২নং সেক্টরে। মেজর শফিউল্লাহ্ এর নেতৃত্বে ২নং সেক্টরে তিনি সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। রুহুল আমিন পলাশ নামক গানবোটের ইঞ্জিনরুমে আর্টিফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উক্ত গানবোট খুলনার মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌ-ঘাটি পি.এন.এস তিতুমীর দখলের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১০ ডিসেম্বর শত্রু বিমানের উপর্যুপরি বোমাবর্ষণে আহত হন। ঘৃণ্য রাজাকারের দল সাহসী এই যোদ্ধাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে রূপসা-র পাড়ে। তিনি শহীদ হন। মোহাম্মদ রুহুল আমিন (জন্ম : ১৯৩৫ - মৃত্যু : ডিসেম্বর ১০, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অমাসান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।