২৭ নভেম্বর ২০১৫, ঢাকা। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও ব্যাংক এশিয়ার যৌথ উদ্যোগে ২৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখ বিকাল ৪.০০ টায় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ-এর ৬৭তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রধান মিলনায়তনে একটি স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। হুমায়ূন আহমেদ-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী জনাব মাজহারুল ইসলাম, মেহের আফরোজ শাওন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ২৩নং গ্যালারিতে হুমায়ূন আহমেদ রচিত বই-পুস্তক, পেইন্টিং, আলোকচিত্র ও স্মৃতিস্মারক নিয়ে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন হুমায়ূন আহমেদ তাঁর সৃজনশীল কর্মে স্মরণীয় হয়ে আছেন। বাঙালির স্বপ্ন দেখা, জাগরণ ও জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার প্রেরণা দিয়েছেন বহুমাত্রিক হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর ব্যক্তিগত স্মৃতি আজো উজ্জ্বল হয়ে আছে। অতি সাধারণ ঘটনা তাঁর দক্ষ জাদুঘকরী বর্ণনায় হৃদয় স্পর্শী হয়ে ধরা দেয়। তিনি অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতি চারণ করে বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমাদের স্মরণে ও স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছেন। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন হুমায়ূন আহমেদ তাঁর গল্প, নাটক, উপন্যাসে বাস্তব ঘটনার বর্ণনার পাশাপাশি হাস্যরস তুলে ধরেছেন। বাঙালির রসবোধ তীব্র। হুমায়ূন আহমেদ যাপিত জীবনের সুখ-দুঃখ দক্ষতায় তার সাহিত্যের উপাদান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আবার গুরুগম্ভীর বক্তব্যের পাশে তার হাস্য, রসাত্বক বক্তব্যে পাঠক, দর্শক আনন্দিত হয়েছে। জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, জাতীয় জাদুঘর প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য, বাঙালির সংগ্রাম, গৌরবের স্মারক যেমন সংগ্রহ ও প্রদর্শন করে থাকে তেমন সমকালিন সাহিত্য, সংস্কৃতির নানা উপাদান সংরক্ষণ করে। হুমায়ূন আহমেদ রচিত গ্রন্থ ও অংকিত চিত্রমালায় বাংলার রূপ বৈচিত্র্য ও বাঙালির অর্জনের নান্দনিক দিক অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী জনাব মেহের আফরোজ শাওন বলেন হুমায়ূন আহমেদ তার লক্ষ ভক্ত অনুরাগীর মধ্যে জীবিত থাকবেন চিরদিন। সভাপতির ভাষণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ নন্দিতনরক ও শঙ্খনীল কারাগার উপন্যাসের মাধ্যমে পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরে তিনি মিসির আলী, হিমু শুভ্র ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গ্রন্থ রচনা করে সব শ্রেণির পাঠকের মনোযোগের কেন্দ্র বিন্দুতে পৌঁছেন। তাঁর অসাধারণ বর্ণনা, কাহিনী বিসত্মৃতি পাঠককে সহজে কাছে টানে। হুমায়ূন হয়ে ওঠেন সকলের প্রিয় মানুষ। হুমায়ূন আহমেদ আজ আমাদের মাঝে নেই। তার লেখনী ও গান আমাদের মাঝে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগের পর যুগ। তিনি জাদুঘরের ৩য় তলায় ২৩ নম্বর গ্যালারিতে আয়োজিত হুমায়ূন আমদের রচিত গ্রন্থ ও চিত্র দিয়ে প্রদর্শনী উদ্বোধন শেষে পরিদর্শন করেন।