ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০১৭। বিকেল ৩টায় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের স্মৃতি-নিদর্শনের প্রদর্শনী এবং তাঁর ‘জীবন ও সাহিত্য’ নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব ইয়াফেস ওসমান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক আন্দালীব রাশদী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। বক্তাগণ শওকত ওসমানের সাহিত্যের নানা দিক এবং আপোষহীন ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের একজন চিন্তক, লেখক ও কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান। তাঁর পৈতৃক নাম শেখ আজিজুর রহমান। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ মোহাম্মদ এহিয়া এবং মাতা গুলজান বেগম। গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, কবিতা, আত্মজীবনী, স্মৃতিখণ্ড, শিশুতোষ ইত্যাদি বিষয়ে লিখেছেন অনেক। তবে কথাশিল্পের ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থান কতটা সুদৃঢ় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি একজন সার্থক কথাশিল্পী। তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। জননী তার প্রথম উপন্যাস। ক্রীতদাসের হাসি, সমাগম, চৌরসন্ধি, রাজা উপাখ্যান, জাহান্নাম হইতে বিদায়, বনী আদম, রাজসাক্ষী তাঁর অন্যতম উপন্যাস। নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত তাঁর রম্যরচনা। তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৬৬ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬৭ সালে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, ১৯৮৩ সালে একুশে পদক, ১৯৯১ সালে মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার এবং আলাওল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ১৪ মে , ১৯৯৮সালে মৃত্যুবরণ করেন। আলোচনা শেষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান লবিতে শওকত ওসমানের স্মৃতি-নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী দর্শকদের জন্য খুলে দেয়া হয়।