ঢাকা, ১৫ নভেম্বর ২০১৭। জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আজ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট- এর যৌথ উদ্যোগে 'প্রাচ্যশিল্পের বিস্তার' শীর্ষক প্রাচ্যকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি দেশবরেণ্য শিল্পী হাশেম খান । সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট লেখক জনাব আলী ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। এই প্রদর্শনীতে ১১৪জন শিল্পীর ১৮০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হবে।
স্বাগত বক্তব্যে শিল্পী আফরোজা জামিল কঙ্কা বলেন, প্রাচ্যকলার প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট- এর সাধারণ সম্পাদক ড. মিজানুর রহমান ফকির আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই প্রদর্শনী সেসব শিল্পীদের চিত্রকর্মে আগ্রহী করে তুলবে যারা বহুদিন ধরে শিল্পচর্চা থেকে দূরে আছেন।
সম্মানিত অতিথি বিশিষ্ট লেখক জনাব আলী ইমাম বলেন, জাতি হিসেবে বাঙ্গালি চিরকালই শিল্পপ্রিয় জাতি। প্রাচ্যশিল্পের মাধ্যমে শিল্পীরা তাদের মনের কথা তুলে ধরেছেন, করেছেন অন্যায়ের প্রতিবাদ।
সম্মানিত অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তার বলেন, বাংলার ইতিহাসের সাথে প্রাচ্যশিল্পের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, এ দেশে প্রাচ্যশিল্পের বিস্তার ঘটেছে এবং প্রতিনিয়ত ঘটছে। তিনি প্রাচ্যশিল্প রক্ষায় অবদানের জন্য প্রয়াত শিল্পীদের প্রতি সম্মান জানান এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রদর্শনী পশ্চিমাশিল্পের পাশাপাশি প্রাচ্যশিল্পের প্রতি সাধারণের আগ্রহ বৃদ্ধি করবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পী হাশেম খান বলেন, ইউরোপীয় প্রভাবে পশ্চিমাশিল্প প্রচার লাভ করে এবং প্রাচ্যশিল্প সমাদর হারায় সর্বত্র। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নন্দলাল বসুর উদ্যোগে কলকাতায় গড়ে ওঠা ‘বেঙ্গল স্কুল অব আর্ট’-এর মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিল্পের আগ্রাসন অনেকটাই রোধ করা যায়। তিনি আরো বেশি করে এ ধরনের প্রদর্শনী অয়োজনের আহ্বান জানান। ঢাকা চারুকলায় প্রাচ্যকলা বিভাগ গড়ে উঠার প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস বলতে গিয়ে বলেন, প্রাচ্যকলা বিভাগের চারা বৃক্ষটি এখন পরিণত বৃক্ষ। আমরা আশাবাদী।
সভাপতির ভাষণে জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, মানুষের প্রকাশের নানা মাধ্যম রয়েছে; চিত্রকলা তার একটি। দ্বিতীয় বারের মতো এই প্রদর্শনীর অংশ হতে পেরে জাদুঘর গর্বিত। তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজেদের ঘরনার শিল্প রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট এর সভাপতি শিল্পী মো. তাজুল ইসলাম সকলকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, মানুষের এই সমর্থন তাদের সামনে আরো অনুষ্ঠান আয়োজনে উৎসাহ যোগাবে।