ঢাকা, ২০ নভেম্বর ২০১৭। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বিকেল ৩ টায় কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের ১২৯তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ‘মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন স্মরণ' অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য লেখক ও প্রবীণ সাংবাদিক জনাব রাহাত খান । অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শামসুজজাহান নূর এবং ড. গুলশান আরা । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম।
অনুষ্ঠান সূচনা করে জাদুঘরের কীপার ড. শিহাব শাহরিয়ার বলেন, স্মরণীয়-বরণীয়দের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ।
প্রধান অতিথি জনাব রাহাত খান বলেন, সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ছিলেন একজন সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক । সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন যে দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছিলেন তা সাংবাদিকতা পেশায় যারা জড়িত আছেন তাদের জন্য বিষয়টি অনুসরণীয় হতে পারে । তিনি অনগ্রসর পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের বিশেষ করে নারী সমাজের অগ্রগতির জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ করতেন তাঁর লেখা-লেখির মাধ্যমে। তাঁর প্রেরণাতেই জাহানারা বেগম, বেগম পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, নাসিরউদ্দীন-এর স্বপ্ন এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে কারণ বাংলাদেশের গ্রামে এখনো মেয়েরা অনেক সুবিধাবঞ্চিত। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে এ ব্যাপারে অন্যথায় আমরা সত্যিকারভাবে এগিয়ে যেতে পারব না।
মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শামসুজজাহান নূর বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় রয়েছে জীবনের হুমকি পাশাপাশি রয়েছে এডভেঞ্চার । যার পুরোটাই উপভোগ করতেন মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন। এজন্য তিনি এদেশের সাংবাদিকতায় আইকন হিসেবে বিবেচিত । তিনি বলেন, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন প্রতিভা চিনতেন ও তার কদর করতে জানতেন। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় কবি নজরুল ইসলাম, কবি সুফিয়া কামাল তাদের শিল্পচর্চা করেন।
মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনকে সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ বলে সম্বোধন করে ড. গুলশান আরা বলেন, বেগম রোকেয়ার মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন মেয়েদের, বিশেষ করে মুসলমান মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করে গেছেন।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বলেন, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন শতবর্ষ পরেও মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে তার কাজের মাধ্যমে । তিনি মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনকে রাজা রামমোহন রায়ের সাথে তুলনা করেন। তিনি সওগাত পত্রিকা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান, যাতে আগামী প্রজন্ম সওগাত সম্পর্কে জানতে পারে ।