ঢাকা, ২১ নভেম্বর ২০১৭। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর দুপুর ১২টায় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে Korean International Cooperation Agency-র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উন্নত প্রযুক্তির সাথে সংরক্ষণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি জনাব ইয়াফেস ওসমান এম.পি । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার মান্যবর রাষ্ট্রদূত লি ইউন ইয়ং, কোরিয়া কালচারাল ফাউন্ডেশনের বর্তমান সভাপতি জনাব লি হিয়াং সু এবং KOICA বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব জো হুন-গু। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্যে জাদুঘরের সচিব জনাব মো. শওকত নবী বলেন, প্রতিদিন ২৫০০ জনের উপর দর্শনার্থী আসেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে এবং এই জাদুঘরে আছে বাংলাদেশের সব থেকে বড় সংরক্ষণাগার। যথাযথ ট্রেনিং এই সংরক্ষণাগারের উপযুক্ত ব্যবহারে সহায়তা করবে। এই অতি প্রয়োজনীয় ট্রেনিংয়ে KOICA- র সাহায্যের জন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি জনাব ইয়াফেস ওসমান এম.পি বলেন, ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়। এদেশের ঐতিহ্য অত্যন্ত রঙ্গিন ও সমৃদ্ধশালী। এই সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। এই ট্রেনিং জাদুঘরের কর্মকর্তাদের এসব মূল্যবান ঐতিহ্য সংরক্ষণে আরো দক্ষ করে তুলবে। বাংলদেশ এখন নিম্নবিত্ত দেশ থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলদেশের এই সাফল্যের পেছনে যেসব দেশের সমর্থন রয়েছে কোরিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম।
কোরিয়া কালচারাল ফাউন্ডেশনের বর্তমান সভাপতি জনাব লি হিয়াং সু আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশি মানুষেরা এই ট্রেনিং এর মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার রপ্ত করতে পারবে এবং তা বাংলাদেশের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে সহায়তা করবে। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশও কোরিয়ার মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে যদি এ দেশের মানুষ উন্নত আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার রপ্ত করে তা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগায়।
বিশেষ অতিথির ভাষণে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার মান্যবর রাষ্ট্রদূত লি ইউন ইয়ং শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে চলা কোরিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল- এর ব্যাপারে বলেন। জাদুঘরে ১৮ নভেম্বর, ২০১৭- ২৪ নভেম্বর,২০১৭ তারিখ পর্যন্ত কোরিয়ান ফিল্ম দেখানো হবে। তিনি KOICA ও Conservation with Advanced Technique for Cultural Heritage (CATCH) কে ধন্যবাদ জানান তাদের প্রোজেক্টের জন্য। এই ট্রেনিং টেকনেশিয়ানদের কর্মদক্ষতা বহুগুণ বাড়াবে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, কোরিয়া এবং বাংলাদেশের সুসম্পর্কের একটি নিদর্শন হচ্ছে এই প্রোজেক্ট। এই ধরনের ট্রেনিং কর্মসূচির মাধ্যমে কোরিয়া বাংলাদেশকে সামনেও সহায়তা করে যাবে বলে তিনি জানান। এই ধরনের কর্মসূচি দুদেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করবে বলে তিনি জানান।
সভাপতির ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে এই প্রোজেক্ট সম্পন্ন করার পেছনে জাদুঘরের কর্মকর্তাদের চেষ্টার পাশাপাশি KOICA -র সমর্থনও রয়েছে। এজন্যে তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন আধুনিক যন্ত্রপাতি যা জাদুঘরে আছে তার সঠিক ব্যবহার জানতে হবে এবং বাঁশ ও বাঁশের তৈরি সামগ্রী সংরক্ষণের উপর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তিনি অনুরোধ জানান যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কোরিয়ান চিত্রশিল্পীদের একটি চিত্রকলা প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য।