ঢাকা, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বিকেল ৩টায় কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন ও কার্যক্রম নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয় । সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা জনাব এইচ টি ইমাম। সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশের অধ্যাপক সলিমু্ল্লাহ খান।
স্বাগত বক্তব্যে জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, জনাব এইচ টি ইমাম ১৯৭১ সালে কিভাবে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত করেন। ১৯৭১ সালে অনিশ্চিত পরিবেশের মাঝে কিভাবে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন সে ব্যাপারে আমরা জানতে পারব। তিনি হচ্ছেন ইতিহাসের সাক্ষী।
স্বাগত বক্তব্যে জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, জনাব এইচ টি ইমাম ১৯৭১ সালে কিভাবে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত করেন। ১৯৭১ সালে অনিশ্চিত পরিবেশের মাঝে কিভাবে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন সে ব্যাপারে আমরা জানতে পারব। তিনি হচ্ছেন ইতিহাসের সাক্ষী।
জনাব এইচ টি ইমাম বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সুন্দর পরিবর্তনের জন্য তিনি মহাপরিচালক ও জাদুঘরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অভিনন্দন জানান। স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে তাঁর সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে তিনি জানান। ১৯৭১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকা কালীন স্থানীয় মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখতে পান তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে। সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে ভারতীয় বর্ডারে ইস্ট বেঙ্গলের বেশ কয়েকটি বেসমেন্ট ছিল যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন সে সময় পশ্চিম পাকিস্তানে থাকাকালীন পশ্চিম পাকিস্তান কিভাবে পূর্ব পাকিস্থানকে বঞ্চিত করছিল তা তিনি বুঝতে পারেন। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১ শীর্ষক নিজের লিখিত বইটির ব্যাপারে বলেন, যাতে তিনি সেসময়ের ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে সার্থকতম স্বাধীনতা যুদ্ধ। তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধ ছিল জনযুদ্ধ কিন্তু এতেও ছিল কিছু দেশদ্রোহী মানুষ যারা ছিল স্বাধীনতাবিরোধী। মানুষের মনে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করে স্বাধীনচেতা করে তুলেন বঙ্গবন্ধু। একারণেই তিনি জাতির পিতা হিসেবে এদেশের মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন বলেন তিনি জানান। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু ও তাঁর অনুসারীরা অনেক ত্যাগ তীতিক্ষা স্বীকার করেছিলেন। ১৯৭১ এর ১০ এপ্রিল গঠিত সরকারকে অনেক অস্থায়ী, প্রবাসী অথবা মুজিবনগর সরকার বলে ভুল করে থাকেন বলে তিনি জানান। তাঁর লিখিত বইয়ে কেবিনেটের সকল সিদ্ধান্তের দলিল দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন এই সরকারটি ছিল আধুনিক একটি সরকার এবং এই সরকারের কোন অভ্যন্তরীণ কাজের জন্য ভারত সরকারের কোন সাহায্য নেওয়া হয়নি বলে জানান। এরপর তিনি উপস্থিত দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। দর্শকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান ২৮ মার্চ তিনি রামগড় যান এবং ভারতীয় সেনা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করেন। ২৪ তম মাউন্টেন ফোর্সের প্রধানের সাথে তিনি যোগাযোগ করেন এবং তখনই প্রথম ভারতীয় বাহিনীর থেকে অস্ত্র গ্রহণ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের রামগড়েই এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রধান কার্যালয় ছিলেন বলে তিনি জানান। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও জানান মুক্তিযুদ্ধে যার অবদানের কথা সকলেই জানেন। তিনি বলেন স্বাধীন বাংলা বেতার ছিল যুদ্ধের মনস্তাত্ত্বিক সমর্থন যা মুক্তিযোদ্ধাদের করেছিল আরো সাহসী।
সভাপতির ভাষণে ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ১৯৭১ নিয়ে আমাদের মনে একটি বিদ্রোহ যুদ্ধ। তিনি সে সময় যুদ্ধকালীন শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া আহমদ ছফার বই থেকে পড়ে বলেন এই যুদ্ধে সকলে অংশগ্রহণ করে। ইতিহাসে এমন একটি সময় আসে যখন একটি সময়ের মূল্য হাজার বছরের থেকে মূল্যবান । একাত্তরের কথা বলা অল্পকথায় সম্ভব নয়। ধর্মের নামে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি হিসেবে রেখেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন এদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিশ্বে দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করবে।