ঢাকা, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে Treditional Jamdani Design- ঐতিহ্যবাহী জামদানি নকশা শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, প্রকাশনার কাজ জাদুঘরের অনেক কাজের একটি। এই প্রকাশনার কাজের ফলাফল অতীতের তুলনায় বর্তমানে অনেক ভালো। শেষ তিন বছরে বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর থেকে। এদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানী নকশা এদেশের মানুষের গর্ব। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এই গ্রন্থ প্রকাশনার অংশ হতে পেরে একটি দায়িত্ব পালন করেছে বলে তিনি জানান।
গ্রন্থের প্রধান গবেষক ও নকশাকার শ্রী চন্দ্রশেখর সাহা বলেন, বইয়ের প্রকাশনা উৎসবের সময় আসলে ফেব্রুয়ারি মাস। এই গ্রন্থ প্রকাশনায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সহায়তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন এই প্রজন্মের কাজে অনেকেই সহায়তা করেছেন। এই প্রকল্পে ৮৬টি জামদানীর নকশা বুনন করা সম্ভব হয় এবং কিছু আড়ং থেকে সংগ্রহ করা হয়। তিনি বলেন, প্রথম বারের মতো এদেশে জামদানী নকশা বুনন লিপিবদ্ধ করা হল এই বইয়ের মাধ্যমে। তিনি আরো জানান সামনে আরো কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের।
গ্রন্থের প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব শাহীদ হোসেন শামীম বলেন, জামদানী নকশার প্রত্যেকটি ভিন্ন ও অনন্য। ১৯১৪ সালে প্রথম জামদানী সংরক্ষণ ও রক্ষার চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে জামদানী রক্ষার একটি প্রকল্পের কথা তিনি জানান যার কাজ চলছে শীতলক্ষা নদীর তীরবর্তী এলাকায়। এই প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণও তিনি উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে বর্ণনা করেন। এই জামদানী শিল্পটি সংরক্ষণ ও রক্ষা করতে বর্তমানে জামদানী বুননকারীদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলেও তিনি জানান। এই বই মানুষকে এই শিল্প রক্ষার ব্যাপারে সচেতন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি জানান এই বইয়ের জামদানীর সঠিক নকশা ও বুননের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়েছে।
মাননীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, এদেশে গবেষণার অভাব রয়েছে যদিও অসংখ্য গুণী মানুষ রয়েছে এখানে। এই প্রকল্পের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই প্রকল্পের অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর গর্বিত বলে তিনি জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সম্প্রতি ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি প্রাপ্ত শীতলপাটির উপরও গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ করা হবে। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদকে এই প্রকল্পের তৃতীয় অংশের কাজের জন্য প্রস্তাব দেয়ার ব্যাপারেও বলেন যাতে সরকার এই কাজের অংশ হতে পারে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শিল্পী হাশেম খান বলেন, এই গবেষণা কর্ম সারাবিশ্বের কাছে পৌছে দেবে বাংলাদেশকে। তিনি বলেন, এদেশের আসল শিল্পী হচ্ছে এদেশের লোকশিল্পীরা। তাদেরকে সহায়তা ও রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। লোকশিল্পীদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে যা আমাদের দেশের ঐতিহ্যেরই অংশ।