জাতীয় জাদুঘরে মাসব্যাপী মসলিন প্রদর্শনী ও মসলিন পুনরুজ্জীবন উৎসব উদ্বোধন

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, দৃক পিকচার লিমিটেড ও ব্র্যাক (আড়ং) যৌথভাবে আয়োজিত মসলিন প্রদর্শনী ও মসলিন পুনরুজ্জীবন উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি উৎসব উপলক্ষে দু’টি ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন এবং মাসব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব আকতারী মমতাজ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, দৃক পিকচার লাইব্রেরী লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী জনাব সাইফুল ইসলাম, লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যালবার্ট মিউজিয়ামের সিনিয়র কিউরেটর মিস রোজ মেরী ক্রিল, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজের সিনিয়র পরিচালক মিস তামারা আবেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি জনাব এম. আজিজুর রহমান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আবুল মাল আব্দুল মুহিত প্রধান অতিথির উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, প্রাচীন বস্ত্র মসলিন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। বাংলার মসলিনের সাথে আমার শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। স্মৃতিচারণে তিনি বলেন, তরুণ বয়সে বলধা গার্ডেনেরর জাদুঘরে ও ঢাকা জাদুঘরে মসলিন দেখেছেন এবং তখন বনেদি পরিবারের বিয়েতে বরকে মসলিনের পাগড়ি পড়ানো হতো। মসলিন ধ্বংশের পেছনে ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের যে ভূমিকা ছিলো তাঁর বক্তব্যে সে বিষয়টিও উঠে আসে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, মসলিন তৈরি এবং রফতানির উপর ব্রিটিশ সরকার নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার ফলে এই অসাধারণ শিল্পটি হারিয়ে যায়। তবে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে মসলিনের হারানো গৌরব উদ্ধার করা যাবে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি মাসব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধনী ঘোষণা করেন। পরে তিনি অতিথিবৃন্দসহ জাদুঘরের নিচতলায় নলিনী কান্ত ভট্টশালী হলে আয়োজিত প্রদর্শনীটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর জনাব তামারা আবেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, মসলিন হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এর ইতিহাসও হারিয়ে যায়। তবে এ হারানো গৌরবকে ফিরিয়ে আনার জন্য দৃক, জাতীয় জাদুঘর যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেজন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই। মসলিনের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার এই সময়োচিত উদ্যোগের সাথে ব্র্যাক যুক্ত হতে পেরে গৌরববান্বিত বোধ করছে। লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড এলবার্ট মিউজিয়ামের সিনিয়ল কিউরেটর মসলিন বিশেষজ্ঞ মিস রোজমেরী ক্রিল মসলিন পুনরুজ্জীবনের এই আয়োজনে উপস্থিত হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। সংস্কৃতি মন্ত্রী জানব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, এই মাস ভাষার মাস, এই মাসেই আমাদের মসলিনের হারানো গৌরব পুনরুজ্জীবনের জন্য এ মাসেই গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই উপলক্ষে মাসব্যপী প্রদর্শনী, আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কর্মশালার উদ্বোধন করা হচেছ। মসলিনকে বাংলাদেশের জাতীয় গৌরব হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার পদক্ষেপ হিসাবে মসলিন প্রদর্শনী ও মসলিন পুনরুজ্জীবন উৎসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব আকতারী মমতাজ তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, দৃক ও ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে ঢাকাই মসলিনের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা আমাদের মসলিনকে বিশ্বের কাছে নতুন করে তুলে ধরবে। মসলিন পুনরুজ্জীবন কর্মসূচিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা কিছু প্রয়োজনীয় সহযোগীতা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে। জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রদর্শনী ও সেমিনারে সকলকে স্বাগত জানান।

Contact Us:

Phone (PABX): +88-02-58614842, +88-02-58614880, 58615012-3
Fax: +88-02-9667381
E-mail: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.
Web: www.bangladeshmuseum.gov.bd