ঢাকা, ১৮ নভেম্বর ২০১৭। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে কথা ও সুরের আমন্ত্রণে গান ও কবিতার যুগলবন্দি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মাসুদ আহমেদ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ও বাচিকশিল্পী বেগম আকতারী মমতাজ। শিল্পী মাসুদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অলেস্টার থেকে তিনি অ্যাকাউন্টিংয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন। তিনি ১৯৮১ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০১৩ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শিল্পী আকতারী মমতাজ ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৮৪ সালের বিসিএস ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিশেষ অতিথি মাননীয় তথ্যমন্ত্রী জনাব হাসানুল হক ইনু এম.পি. বলেন, এই দু'শিল্পী সরকারি আমলা হওয়ার পরেও তাদের কর্মজীবনের পাশাপাশি শিল্পচর্চা করেন। তিনি বলেন, শিল্পীরা ঈশ্বর ছুঁতে চায়। তারা মানুষের মনকে ছুঁতে চায়। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুও কবিদের মতো মানুষের মনকে ছুঁতে পেরেছিলেন। তাই তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ এ দেশকে স্বাধীন করেছিল। তিনি আরো বলেন, বাংলা ভাষার একটি অশ্লীলতা চলছে, অন্যান্য ভাষার সাথে মিশিয়ে এর সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে; এ থেকে ভাষাকে রক্ষা করতে শিল্পচর্চা অতীব প্রয়োজন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে অন্য এক বিশেষ অতিথি মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমেদ এম.পি. বলেন, শিল্পী মাসুদ আহমেদ -এর গান তিনি আগে শুনেছেন এবং নিঃসন্দেহে তিনি একজন খুবই ভালো শিল্পী। কর্মক্ষেত্রে মাসুদ আহমেদ অত্যন্ত দায়িত্ববান। তিনি আরো বলেন, গান আমাদের মনে অন্য রকম একটি অনুভূতির সৃষ্টি করে। একজন শিল্পী তার মন থেকে শিল্পচর্চা করেন যা মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বঙ্গবন্ধু দেন তাঁর হৃদয় থেকে যা সাধারণ মানুষকে স্পর্শ করেছিল। তাই এই ভাষণ আজ ইউনেস্কো দ্বারা শ্রেষ্ঠ ভাষণের স্বীকৃতি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে শিল্পী মাসুদ আহমেদ 'মধুর আমার মায়ের হাসি', 'তোমারে পারিনিগো ভূলিতে' সহ বিখ্যাত কিছু আধুনিক গান করেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৪০০ সাল, দুঃসময়, আমি, বাঁশিওয়ালা, সোনার তরী এবং নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ কবিতাগুলোসহ মোট আটটি কবিতা আবৃতি করেন বেগম আকতারী মমতাজ। কবিতা আবৃতির পাশাপাশি তিনি প্রতিটি কবিতার প্রেক্ষাপটও ব্যাখ্যা করেন। অনুষ্ঠানে শিল্পী মাসুদ আহমেদ-এর গীত ৯টি গান নিয়ে আধুনিক গানের এ্যালবাম 'আকাশের ঐ সীমা ছাড়িয়ে' -এর মোড়ক উন্মোচন করা হয় । উপস্থিত দর্শক-শ্রোতামণ্ডলী শিল্পীদের পরিবেশনা বিমোহিত হয়ে উপভোগ করেন।