বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে নবাব ফয়জুন্নেছা: বাঙালি সমাজের আলোকবর্তিকার উপর সেমিনার আয়োজন।

ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও পিএনএফ ট্রাস্ট (Philanthropist Nawab Fayzunessa Trust) এর যৌথ আয়োজনে বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাকক্ষে ব্রিটিশ শাসনামলের প্রথম মুসলিম মহিলা নবাব, দানশীল ও বাঙালি সমাজের আলোকবর্তিকা নবাব ফয়জুন্নেছার উপরে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয় । এতে প্রামাণ্যচিত্র ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিএনএফ ট্রাস্টের ফাউন্ডার ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সুপন রায়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে মাননীয় অর্থমন্ত্রী জানাব আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জনাব তাজুল ইসলাম এমপি ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব ইব্রাহিম হোসেন খান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ সোনিয়া নিশাত আমিন এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব আলতাফ হোসেন। সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা শামীম আখতার।

সেমিনারের শুরুতে পিএনএফ ট্রাস্টের ফাউন্ডার ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সুপন রায় ব্রিটিশ শাসনামলের প্রথম মুসলিম মহিলা নবাব, দানশীল ও বাঙালি সমাজের আলোকবর্তিকা নবাব ফয়জুন্নেছার উপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এরপর উপস্থিত অতিথিরা এই মহান নারীর বৈচিত্রময় জীবনের উপর আলোকপাত করেন। তারা বলেন, নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম মহিলা নবাব। তিনি অনেকটা নিজের অদম্য ইচ্ছার কারণে শিক্ষিত হন। শিক্ষা, সমাজকল্যাণ ও সেবাব্রতে তিনি যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তা ইতিহাসে বিরল । তিনি সমাজ সংস্কারের অংশ হিসেবে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি জোর প্রচেষ্টা চালান । মহারাণী ভিক্টোরিয়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ফয়জুন্নেসাকে বেগম এবং এর পর নবাব উপাধি দেন । ১৮৮৯ সালে তার নির্দেশক্রমে ফয়জুন্নেসাকে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে 'নবাব' উপাধি দেয়া হয় বলেও জানান আলোচকেরা।

তারা আরো বলেন, সে সময় জমিদার বংশের সন্তান হিসেবে বেশ আরাম-আয়েশের মধ্য দিয়ে তিনি বেড়ে ওঠেন। মোগল রাজত্বের উত্তরসূরী এই মহীয়সী নারীর দুই ভাই( এয়াকুব আলী চৌধুরী এবং ইউসুফ আলী চৌধুরী) আর দু’বোন (লতিফুন্নেসা চৌধুরাণী এবং আমিরুন্নেসা চৌধুরাণী) ছিল । ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ায় তাঁর প্রচুর আগ্রহ দেখে তার বাবা তার জন্য একজন গৃহশিক্ষক নিযুক্ত করেন। তিনি কঠোর নিয়মানুবর্তিতা পালন করে তাঁর জ্ঞানস্পৃহাকে আরো উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করে তোলেন। গৃহশিক্ষকের সাহায্যে ফয়জুন্নেসা খুব দ্রুতই কয়েকটি ভাষার উপর গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হন । বাংলা, আরবি, ফার্সি ও সংস্কৃত এ চারটি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভসহ ফয়জুন্নেসার এ প্রতিভা স্ফুরণে তাঁর শিক্ষক তাজউদ্দিনের অবদান অতুলনীয়। ফয়জুন্নেসা তার চিন্তা কাজ কর্মে ছিলেন সে সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আধুনিক। সেকালের সমাজ ব্যবস্থার সবরকম বাঁধা পেরিয়ে তিনি সম্পূর্ণ কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনে মনোযোগ দিয়েছিলেন । তাই একজন নারী হয়েও সে সময়ে জমিদারির কঠোর দায়িত্ব তিনি সফলভাবে পালন করতে পেরেছেন । তিনি নির্ভীকভাবে শাসনকাজ পরিচালনা করেন।

Contact Us:

Phone (PABX): +88-02-58614842, +88-02-58614880, 58615012-3
Fax: +88-02-9667381
E-mail: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.
Web: www.bangladeshmuseum.gov.bd