ঢাকা, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। বিকেল ৫টায় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ঢাকা আর্ট সামিটে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর থেকে প্রকাশিত জয়নুল আবেদিনের চিত্রকর্ম নিয়ে তৈরি Master Artists of Bangladesh: ZAINUL ABEDIN শীর্ষক অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব আবুল খায়ের,বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শিল্পী হাশেম খান , প্রখ্যাত শিল্পী কালীদাস কর্মকার, শিল্পী মনিরুল ইসলাম, সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জনাব রাজিব সামদানী ও জনাব নাদিয়া সামদানী । এছাড়াও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শিল্পী, কিউরেটর, শিল্পবোদ্ধারাও উপস্থিত ছিলেন এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা শিল্পাচার্যের বিপুল সংখ্যক ছবি থেকে একশ ছবি নিয়ে এ অ্যালবাম প্রকাশ করা হলো।
শিল্পী হাশেম খান বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক প্রকাশিত Master Artists of Bangladesh: ZAINUL ABEDIN অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন শিল্পকলার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাঁর চিত্রকর্ম মাটি ও মানুষের কথা বলে। বিচিত্র ভাবনায় অবগাহিত তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এ অ্যালবাম প্রকাশ করে একটি দায়িত্ব পালন করছে। এতে তরুণ প্রজন্ম ও শিল্পবোদ্ধারা জয়নুলের বহুমাত্রিক ভাবনায় যুক্ত হতে পারবে। ইনস্টিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফ্টস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে আধুনিক শিল্প আন্দোলনের তিনিই পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি তাঁর নেতৃত্বের গুণে অন্যান্য শিল্পীদের সংগঠিত করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। শিল্পী জয়নুল আবেদিন শিল্পকলাকে কখনই সাধারণ জীবনের বাইরের কোনো বিষয় বলে গণ্য করেননি। তাঁর কাছে শিল্প ছিল জীবনেরই এক প্রকাশ আর এর উদ্দেশ্য মানবসমাজকে সমৃদ্ধ ও সুন্দর করে তোলা।
শিল্পী জয়নুল আবেদিনের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী মোস্তফা জামান। তিনি বলেন, জয়নুল আবেদিন ভারতীয় উপমহাদেশের বিস্ময়কর এক শিল্প-প্রতিভা। তিনি ছিলেন একাধারে একজন অসাধারণ মেধাবী শিল্পী, অনুপ্রেরণাদানকারী শিল্পগুরু ও প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পকলাচর্চার কৌশলী সংগঠক। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পচর্চার জনক। আবার একই সঙ্গে তিনি ছিলেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পের পুনরুদ্ধারকারী। তিনি নিজেও ছিলেন একজন সংস্কৃতিবান বাঙালি।
শিল্পী হাশেম খান বলেন, জয়নুল আবেদিন ছিলেন মুক্তিকামী মানুষ। স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্যে যারা সংগ্রাম করেন, তাদের সবার সঙ্গেই একাত্ম ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ জয়নুলের মনে প্রচণ্ড আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিজয় অর্জনের পরপরই তিনি পূর্ণোদ্যমে লেগে যান শিল্পচর্চা সংগঠনের কাজে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জয়নুল আবেদিনকে দায়িত্ব দেন বাংলাদেশের সংবিধানের অঙ্গসজ্জার। তিনি প্রবল উৎসাহের সঙ্গে কাজটি সমাধা করেন। তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেন কয়েকজন তরুণ শিল্পী।