বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠান আয়োজন।

ঢাকা, ২৫ মার্চ ২০১৮। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা জনাব হোসেন তৌফিক ইমাম। সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমু্ল্লাহ খান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মুক্তির গান’ ও স্টপ জেনোসাইট শীর্ষক প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলতে গিয়ে জনাব হোসেন তৌফিক ইমাম বলেন, স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে ছিল তাঁর সংশ্লিষ্টতা। ১৯৭১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে থাকা কালীন স্থানীয় মানুষের প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখতে পান তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে। সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে ভারতীয় বর্ডারে ইস্ট বেঙ্গলের বেশ কয়েকটি বেসমেন্ট ছিল যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে সার্থকতম স্বাধীনতাযুদ্ধ। তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধ ছিল সত্যিকারের জনযুদ্ধ কিন্তু এই যুদ্ধেও কিছু মানুষ বিরোধীতা করেছিল। জনযুদ্ধের মূল প্রকৃতিই ছিল রাজনৈতিক । মূলত আওয়ামী লীগ এবং সমমনা দলের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়। এদেশের বঞ্চিত মানুষদের স্বাধীনচেতা করে তুলেন বঙ্গবন্ধু। একারণেই তিনি জাতির পিতা হিসেবে এদেশের মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন বলেন তিনি জানান। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু ও তাঁর অনুসারীরা অনেক ত্যাগ তিতীক্ষা স্বীকার করেছিলেন। তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কোন বাঙ্গালী তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। ১৯৭৫ এ যারা তাঁকে হত্যা করেছে তাঁরা বাঙ্গালী নয় বরং তাঁরা অনুপ্রবেশকারী যারা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। ১৯৭১ এর ১০ এপ্রিল গঠিত সরকারকে অনেক অস্থায়ী, প্রবাসী অথবা মুজিবনগর সরকার বলে ভুল করে থাকেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন এই সরকারটি ছিল আধুনিক একটি সরকার এবং এই সরকারের কোন অভ্যন্তরীণ কাজের জন্য ভারত সরকারের কোন সাহায্য নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ তিনি রামগড় যান এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি ২৪তম মাউন্টেন ফোর্সের প্রধানের সাথে তিনি যোগাযোগ করেন এবং তখনই প্রথম ভারতীয় বাহিনী থেকে অস্ত্র গ্রহণ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের রামগড় থেকেই এপ্রিল মাস পর্যন্ত সকল নির্দেশনা প্রদান করা হত বলেও তিনি জানান। এরপর তিনি বলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে। তিনি বলেন স্বাধীন বাংলা বেতার ছিল যুদ্ধের মনস্তাত্ত্বিক সমর্থন যা মুক্তিযোদ্ধাদের করেছিল আরো সাহসী।

সভাপতির ভাষণে ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এদেশের ইতিহাসের একটি গর্বের বিষয়। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসে এমন একটি সময় আসে যখন একটি সময়ের মূল্য হাজার বছরের থেকে মূল্যবান। একাত্তরের কথা বলা অল্পকথায় সম্ভব নয়। ধর্মের নামে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি হিসেবে রেখেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন এদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিশ্বে দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করবে। আজ হোসেন তৌফিক ইমাম সাহেব যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের নানা মাত্রিক দিক তুলে ধরলেন তা নতুন প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করি।

Contact Us:

Phone (PABX): +88-02-58614842, +88-02-58614880, 58615012-3
Fax: +88-02-9667381
E-mail: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.
Web: www.bangladeshmuseum.gov.bd