বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে প্রভাবশালী সমাজ বিজ্ঞানী কার্ল মার্ক্স এর ২০০তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে সেমিনারের আয়োজন।

ঢাকা, ৫ মে ২০১৮। আধুনিক সভ্যতার এই প্রভাবশালী সমাজ বিজ্ঞানীর ২০০তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সকাল ১১টায় কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘ইতিহাসবেত্তা কার্ল মার্কস’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. সলিমু্ল্লাহ খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ।

স্বাগত বক্তব্যে জনাব ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ শ্লোগানে যিনি শোষিত-বঞ্চিত মেহনতি মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকারের বিষয়ে সচেতন করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন, তিনি হলেন উনবিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত চিন্তাবিদ, দার্শনিক, ঐতিহাসিক, সমাজবিজ্ঞানী ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা কার্ল মার্ক্স। এছাড়াও তিনি ছিলেন একজন স্বভাব কবি। তিনি হচ্ছেন ইতিহাসের সাক্ষী।

সেমিনারে অধ্যাপক ড. সলিমু্ল্লাহ খান কার্ল মার্ক্স-এর উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধ উপস্থাপনে তিনি বলেন, এ বছর-এই ইংরেজি ২০১৮ সালে-কার্ল মার্ক্সের জন্মের দুইশত বছর পূর্ণ হইতেছে। তাঁহার বিষয়ে যত কথা বলা যায় ইহার মধ্যে তাহার প্রায় সবই বলা হইয়া গিয়াছে। এতদিন পর-এই এখন-নতুন আর কোন কথাটি বলা যায়? যেদিন মার্ক্স মারা গেলেন তাহার তিন দিনের মাথায়-মোতাবেক ১৭ মার্চ ১৮৮৩ সালে-লন্ডনের হাইগেট গোরস্থানে তাঁহার সমাধির পাশে দাঁড়াইয়া দীর্ঘদিনের বন্ধু ফ্রেডরিক এঙ্গেলস বলিয়াছিলেন, ‘যুগ যুগ ধরিয়া তাঁহার নাম কীর্তিত হইতে থাকিবে, আর কীর্তিত হইবে তাঁহার সাধনা।’ ১৮৪৮ সালে কার্ল মার্ক্স যখন ‘কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহার’ রচনা করিতেছিলেন তখনও এয়ুরোপ মহাদেশে শ্রমিক শ্রেণি পুরাপুরি গড়িয়া উঠে নাই। ফরাশি একাডেমি প্রণীত ফরাশি ভাষার অভিধানে ‘প্রলেতারিয়েত’ শব্দটি প্রথম ঢুকিবার অনুমতি পাইয়াছিল মাত্র ১৮২৮ সালে-মানে মার্ক্সের জন্মের মাত্র দশ বছর পর আর ইশতেহারের বিশ বছর আগে। বুর্জোয়া শ্রেণি খুব সহজে এই শব্দটি উচ্চারণ করিতে চাহেন নাই। তাহারা ইহার পরিবর্তে ‘জনতা’ শব্দটি ব্যবহার করিতে শুরু করেন। ইংরেজিতে একবচনে ‘ম্যাস’ আর বহুবচনে ‘ম্যাসেস’ শব্দের ব্যবহার ১৮৩০ সালের পর খুব বাড়িয়া যায়। নাপোলেয়ঁ বোনাপার্তের ভ্রাতুষ্পুত্র লুই নাপোলেয়ঁ বলিয়াছিলেন, ‘এখন বর্ণভেদ লোপ পাইয়াছে, আর জনতার শাসন কায়েম হইয়াছে। এঙ্গেলসের যে বক্তৃতা হইতে আজ আমরা এতগুলি কথা ধার করিয়াছি সেই বক্তৃতায় তিনি মার্ক্সের পরিচয় দিয়াছিলেন এইভাবে: মার্ক্সের মৃত্যুতে দুইটি শক্তির প্রচণ্ড ক্ষতি হইয়াছে-প্রথম শক্তির নাম এয়ুরোপ ও আমেরিকার প্রলেতারিয়েত বা শ্রমিক শ্রেণি। আর দ্বিতীয় যে শক্তির ক্ষতি হইয়াছে তাহার নাম ইতিহাস শাস্ত্র। সত্য সত্যই মার্ক্স প্রণীত বিজ্ঞানের নাম ইতিহাস শাস্ত্র। দুঃখের মধ্যে, বর্তমান কালের অনেক মার্ক্স ব্যবসায়ী এই সত্যটা আমলই করেন নাই। তারপর তিনি জাদুঘরকে ধন্যবাদ জানান কার্ল মার্ক্স নিয়ে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য ।

সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে জনাব রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব ফয়জুল লতিফকে ধন্যবাদ জানাই কার্ল মার্ক্স এমন একটি সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আর এই অনুষ্ঠানের বামদল এবং জাসদের এই কার্ল মার্ক্স এর ব্যাপারে জানা দরকার তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। তিনি কার্ল মার্ক্স-এর সম্পর্কে জানান যে, তার সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না কারণ তার মতো, পুঁজি, অর্থনৈতিক বিধি বা নিয়ম অনুসারের সংজ্ঞা কেউ দিতে পারবে না। আর তাঁর বিরোধিতা অনেকেই করেছেন তবে তারা বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি। আর মানুষ তখন তার র্মম বুঝতে না পারলেও এখন তাঁর র্মম বুঝতে পারছেন। এই আলোচনার আলোকে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

Contact Us:

Phone (PABX): +88-02-58614842, +88-02-58614880, 58615012-3
Fax: +88-02-9667381
E-mail: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.
Web: www.bangladeshmuseum.gov.bd