বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ‘বঙ্গবন্ধু: মৃত্যুঞ্জয়ী মহানায়ক’ শীর্ষক প্রদর্শনীর ক্যাটালগের মোড়ক উন্মোচন।

ঢাকা, ২৯ আগস্ট ২০১৮। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস ২০১৮ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক সেমিনার, জাদুঘরে সংগৃহীত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি-নিদর্শন এবং আলোকচিত্রের মাসব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি। অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে বেলা ২:৩০ মিনিটে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু: মৃত্যুঞ্জয়ী মহানায়ক শীর্ষক মাসব্যাপী প্রদর্শনীর ক্যাটালগের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মো: নাসির উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মো. মশিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস।

স্বাগত ভাষণে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব জনাব মো. শওকত নবী বলেন, শেখ মুজিব কোনো সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, একটি আন্দোলন থেকে একটি সংগ্রাম এবং সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি একটি দেশ ও একটি জাতির ইতিহাস। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। মুজিব সামরিক শাসনকে পিছু হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং বাংলা এবং বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তার অবদানের জন্য ভারতবর্ষীয় এবং বিশ্বজুড়ে সকল বাংলাভাষীর কাছে পূজনীয়। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শোকের মাস আগস্টে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে মাসব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করে একটি দ্বায়িত্ব পালন করল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য যার প্রতি বাঙ্গালিরা চিরকৃতজ্ঞ তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তৃণমূল থেকে উঠে আসা বঙ্গুবন্ধু, একটি জনগোষ্ঠির আস্থাভাজন রাজনৈতিক মহীরুহ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, একটি জাতিকে তিনি স্বাধীনতার জন্যে ধাপে ধাপে প্রস্তুত করেছিলেন।এগুলো শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ব ইতিহাসের অংশ।বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। বাংলা, বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু এই শব্দগুলো একটি ছাড়া অন্যটি অসম্পূর্ণ। সুতরাং বাংলাদেশকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানার বিকল্প নেই। জাদুঘরের মাসব্যাপী প্রদর্শনী ও সেমিনার আয়োজনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জাদুঘরের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই মহান নেতার ব্যাপারে জানতে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে তারা জানতে এদেশের সঠিক ইতিহাস।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জনাব মো. মশিউর রহমান বলেন, বাংলা, বাঙালির কৃষ্টি এবং ইতিহাস রক্ষায় সবার আগে যিনি আন্দোলনে নেমেছেন, তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৫ সালের ২৫ আগস্ট করাচিতে পাকিস্তান গণপরিষদে বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান নামের পরিবর্তে পূর্ব বাংলা নাম রাখার প্রস্তাব দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর এই দাবিকে অগ্রাহ্য করেই পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠি বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তান ডাকতে থাকে। অনেক বছর পরে, প্রহসনমূলক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্তি পাবার পরে বঙ্গবন্ধু এই বঞ্চনা থেকে মুক্তির জন্য প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ৫ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলার নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ। সভাপতির ভাষণে জনাব মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস বলেন,১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে তৎকালীন রেস কোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ভাষন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ডাক। জাতিসংঘে তিনিই প্রথম ব্যক্তিত্ব, যিনি তার স্বপ্ন, তার জনগণের আকাক্সক্ষার কথা বাংলায় শোনালেন বিশ্ব নেতাদের। এই মহান নেতার জীবনকে কোন রং বা বর্ণ মালায় একত্রীকরণ করা যায় না। কারণ মুজিব তার সৃষ্টির চেয়েও মহান। তিনি আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শ এবং উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করা বাঙালিজাতির মহান কর্তব্য। তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী। তার স্মৃতি আমাদের ভবিষ্যতের পথের দিশা।

Contact Us:

Phone (PABX): +88-02-58614842, +88-02-58614880, 58615012-3
Fax: +88-02-9667381
E-mail: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.
Web: www.bangladeshmuseum.gov.bd